বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেছেন, ক্ষমতার চেয়ারটা খুব মজার। কিন্তু খুব রিস্ক আছে- এটা মনে রাখবেন। শেখ হাসিনা ক্ষমতার চেয়ার বসার পর হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’ আন্দোলনের উদ্যোগে অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক আওয়ামী সুবিধাভোগীদের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসনের প্রতিবাদে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
আব্দুস সালাম বলেন, ‘এই অন্তর্বর্তী সরকার যদি ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মাদের কাঁধে ভর করে টিকে থাকতে চায়, তাহলে তাদের ভুল হবেই। আওয়ামী লীগ যেমন মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ব্যবসা করেছে, কয়েকদিন পর আপনাদেরও যাতে না বলে ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানে যারা শহিদ হয়েছেন তাদের নিয়েও আপনি সেই কাজ করছেন।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সবাই বলি, ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিন। কিন্তু কেউ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না। বারবার সেটাই প্রমাণ হয়। গণমাধ্যমে দেখলাম, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যাদের অঙ্গহানি হয়েছে তারা চিকিৎসা না পেয়ে উপদেষ্টাকে ঘেরাও করে রেখেছিলেন। এর চেয়ে দুভার্গ্য আর কিছু নাই।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের লোকজন বা উপদেষ্টারা বলেন ধৈর্য ধরেন। আমরা তো ধৈর্য ধরে আছি। শেখ মুজিবও বলেছিলেন, ধৈর্য ধরেন; তিন বছর কিছু দিতে পারব না। দেখা গেল, তিন বছরে তিনি দুর্ভিক্ষ দিলেন। তখন তো আর কেউ ধৈর্য ধরে নাই। এই সরকারকে বলব, ধৈর্য তো ধরে আছি। কিন্তু যেগুলো বেসিক নিড, খুব জরুরি সেগুলোও তো আপনি দিতে পারছেন না।’ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানোর কোনো অ্যাকশনও দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
অন্তবর্তী সরকারের উদ্দেশে আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমরা তো বলেছি, উপদেষ্টা বাড়ান। জনগণের চিন্তার বহিঃপ্রকাশ তো ঘটতে হবে। জনগণের পছন্দের মানুষ তো হতে হবে। যাদের নিলেন তারা এই সমাজে কতটুকু কাজ করতে পারবে? কতটুকু পরিবর্তন আনতে পারবে? তাদের ওপর জনগণের কতটুকু আস্থা আছে? সেই আস্থাশীল লোকগুলোকে আপনারা নেন। তাহলে তো জনগণের কোনো বাধা থাকবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ সরকারকে আমরা সময় দিতে চাই। জনগণ দিতে চায়। কিন্তু সেই সময়টা তো কাজে লাগতে হবে। ১০০ দিন পার হয়ে গেছে। জনগণ তো সেটার হিসাব-কিতাব করবেই। আমরা চাই, মানুষ ভোটের অধিকার ফিরে পাক। সরকারে কারা থাকবে, সেটা জনগণ ম্যান্ডেট দিবে। এ ব্যাপারে কোনো আপস নেই। জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। এজন্য ৫ আগস্টের অভ্যুত্থান হয় নাই।’
‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’ আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ। সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।