
ভারতে ব্যাপক বৃষ্টিপাতসহ ঝড়ের তাণ্ডব ও বজ্রপাতে বিহার, উত্তর প্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে; সেই সঙ্গে ঘরবাড়ি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় বিহারে অন্তত ৫৮, উত্তরপ্রদেশে ২২ এবং পশ্চিমবঙ্গে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বিহার ও উত্তর প্রদেশে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করছে রাজ্য দুটির প্রশাসন।
বিহারের রাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নালন্দা জেলাতেই অন্তত ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভোজপুরে পাঁচজন এবং গয়া জেলায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া পাটনা, গোপালগঞ্জ, মুঙ্গের, সমস্তীপুর, জেহানাবাদ, মুজাফফরপুর, আরারিয়া ও বেগুসরাইয়ে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
বজ্রপাতে নিহতদের পরিবারকে ৪ লাখ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা বলেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার।
বিহারের বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়েছে। বিহার প্রশাসন বলছে, শুক্রবার (১১ এপ্রিল) পর্যন্ত বিহারের বিভিন্ন জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। এই কারণে নালন্দা, মধুবনী, পূর্ব এবং পশ্চিম চম্পারণসহ বিভিন্ন জেলায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এর আগে বুধবার বিহারের চারটি জেলায় বজ্রপাতে অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
সরকারি কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিহারে এর আগে বজ্রপাতে এত মানুষের মৃত্যুর নজির নেই। গোটা রাজ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস বিহার রাজ্যের মানুষকে খোলা আকাশের নিচে না থাকার পরামর্শ দিয়েছে। বজ্রপাতের সময় সবাইকে প্রশাসনের দেওয়া সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার।
অন্যদিকে বিহারের প্রতিবেশী রাজ্য উত্তর প্রদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় বজ্র-বৃষ্টিতে কমপক্ষে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। ত্রাণ কমিশনারের কার্যালয়ের তথ্য অনুসারে, প্রবল বাতাসের কারণে দেওয়াল অথবা ছাদ ধসে এবং বজ্রপাতে ১৩ জন মারা গেছেন। অনেকে আহত হয়েছেন।
বৃষ্টিজনিত অন্যান্য কারণে কানপুর, দেহাত, ফতেহপুর, ফিরোজাবাদ, কনৌজ, সন্ত কবির নগর, সীতাপুর, সিদ্ধার্থনগর, আজমগড়, আমেঠি, বারাবাঁকি ও বালিয়াসহ রাজ্যের ৩৬টি জেলার মধ্যে ১১টিতেই হতাহতের খবর পাওয়া গেছে।
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ মৃতদের পরিবারকে ৪ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি ভারী বৃষ্টিপাত এবং বজ্রপাতের কারণে জীবন ও ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য একটি সমীক্ষা পরিচালনা করার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
পশ্চিমবঙ্গে বজ্রপাতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের এক জওয়ান মারা গেছেন। ভারত-বাংলাদেশের শিলিগুড়ি ফাঁসিদেওয়া সীমান্তের কাছে কর্তব্যরত অবস্থায় মারা যান তিনি।