ঢাকা মহানগর এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। রোববার (২৪ নভেম্বর) ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, আপিলের আবেদন প্রস্তুতির কাজ চলছে।
এর আগে, গত ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট ঢাকা মহানগর এলাকায় তিন দিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে কেন এ যান চলাচল বন্ধে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তাকে বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। প্যাডেলচালিত রিকশা মালিকদের করা এক রিটের প্রেক্ষিতে এই আদেশ আসে।
এরপর হাইকোর্টের নির্দেশের পর থেকেই উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক। ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা মূল সড়কে চলাচলের অনুমতি এবং হাইকোর্টের নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। আজ রোববার (২৪ নভেম্বর) নবীনগর বেড়িবাঁধ, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, গাবতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় চালকরা সড়ক অবরোধ করেন। এতে যানজট সৃষ্টি হয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
অন্যদিকে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা বিশাল একটি মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার দোয়েল চত্বর, হাইকোর্ট মাজার মোড় ও কদম ফোয়ারা হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আসেন। এ সময় তারা ‘ব্যাটারিচালিত যানবাহন বন্ধে হাইকোর্টের আদেশ প্রত্যাহার করতে হবে’ স্লোগান দিতে থাকেন। পরে প্রেস ক্লাবের সামনে এসে তারা রাস্তায় বসে পড়েন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, প্রেসক্লাব এলাকায় বর্তমানে হাজারো অটোরিকশাচালক জড়ো হয়েছেন। তারা সেখানে বিক্ষোভ করছেন।
ঢাকা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের তথ্য বলছে, রাজধানীতে বর্তমানে প্রায় ৮ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল করছে। যদিও মূল সড়কে এগুলো চলাচলের অনুমতি নেই, তবু এগুলো অবৈধভাবে চলাচল করছে। গত দুই মাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রায় এক লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।
উল্লেখ্য, হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে গত কিছুদিন ধরে টানা বিক্ষোভ করছেন অটোরিকশা চালকরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে চালকদের কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ এবং টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। এতে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে, রাজধানীর কোথাও কোথাও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াও হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।