এক পক্ষ চায়, সাকিব আল হাসানকে দেশে ফেরার সুযোগ দিয়ে মিরপুরে খেলে টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষ টানার সুযোগ দেওয়া হোক। আরেক পক্ষের দাবি, সাকিবকে মিরপুর টেস্টে তো নয়ই, বাংলাদেশ জাতীয় দলেই আর রাখা যাবে না!
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আগামীকাল শুরু হতে যাওয়া মিরপুর টেস্টের আগে সাকিব-ইস্যুতেই গত দু-তিন দিন তোলপাড় মিরপুর স্টেডিয়াম। তার চূড়ান্ত রূপই বুঝি আজ দেখা গেল! সাকিব-ভক্ত ও সাকিব-বিরোধী দুই পক্ষই আজ মিরপুরে এসেছে, এবং সাকিব বিরোধীদের হাতে মার খেয়েছে সাকিব-ভক্ত পক্ষ।
তবে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে দুই পক্ষ ছত্রভঙ্গ হলেও মার খাওয়া সাকিব-ভক্তরা এরপর আবার ফিরে এসেছেন মিরপুর স্টেডিয়ামের ২ নম্বর গেইটে। বিক্ষোভ করেছেন তাঁরা।
ভারত সফরে কানপুরে দ্বিতীয় টেস্টের আগের দিন সাকিব জানিয়ে দেন, টি-টোয়েন্টিতে তাঁর শেষ ম্যাচটি বিশ্বকাপেই খেলে ফেলেছেন। টেস্টেও শেষ টানতে চান মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলে। তবে নিরাপত্তাশঙ্কার কারণে সেখানে শর্ত জুড়ে দিয়েছিলেন সাকিব। বিসিবির কাছে তাঁর চাওয়া ছিল, দেশে ফেরা ও খেলার সময়ের নিরাপত্তা এবং যেকোনো সময়ে দেশত্যাগের অনুমতি নিশ্চিত করা হলেই মিরপুরে খেলবেন তিনি।
এ নিয়ে মাঝে বিসিবির পক্ষ থেকে এবং ক্রীড়া উপদেষ্টার দিক থেকেও নানামূখী বক্তব্য শোনা যায়। শেষ পর্যন্ত গত ১৬ অক্টোবর সাকিবকে রেখেই মিরপুর টেস্টের স্কোয়াড ঘোষণা করে বিসিবি। কিন্তু এরপর থেকেই বাঁধে ঝামেলা।
সাকিব ১৭ অক্টোবর দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু ১৬ অক্টোবরই মিরপুরে একটি গ্রুপ সাকিবের কুশপুত্তলিকা পোড়ানোর পর নিরাপত্তাশঙ্কায় সাকিবকে দেশে ফিরতে নিষেধ করে দেওয়া হয় বিসিবির দিক থেকে। ১৭ অক্টোবরও ২০-২৫ জনের একটি গ্রুপ সাকিবের বিরোধিতায় স্লোগান দেয় মিরপুরে। সাকিবকে বাংলাদেশ দলে আর খেলার সুযোগ দিলে কড়া প্রতিবাদের ব্যাপারে বিসিবিকে হুঁশিয়ারি দেয় তারা।
১৮ অক্টোবর সাকিবকে মিরপুর টেস্টের দল থেকে বাদ দিয়ে তাঁর বদলে হাসান মুরাদকে দলে নেয় বিসিবি। কিন্তু সেদিনই আবার সাকিব-ভক্তদের ২০-২৫ জনের একটি পক্ষ মিরপুরে জড়ো হয়। সাকিবকে নিরাপত্তা দিয়ে ফেরানো ও মিরপুরে খেলে তাঁর সসম্মান বিদায়ের ব্যবস্থা করতে বিসিবির কাছে চার দফা দাবি জানায় তারা।
এরপর আজ দুই পক্ষই এসেছে মিরপুরে। সকালে ১৫-২০ জনের মতো সাকিব ভক্ত হাজির হয়েছিলেন মিরপুরে। স্টেডিয়ামের এক নম্বর গেটের সামনে দাঁড়িয়ে তারা বর্তমান বোর্ড প্রধান ফারুক আহমেদের পদত্যাগ দাবি করেন। তারা জানান কানপুরে নয়, সাকিবের শেষ টেস্ট মিরপুরেই হবে।
একটু পর তারা রাস্তার অন্য প্রান্ত দিয়ে দুই নাম্বার গেটের দিকে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, এমন অবস্থায় লাঠি ও বাঁশ নিয়ে হামলা করে আরেকটি গ্রুপ। বিশেষ করে সাকিবের জার্সি পরিহিত কয়েক সমর্থককে অনেক মারধর করা হয়। এ সময় হামলাকারীদের সাকিব বিরোধী স্লোগান দিতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে ছত্রভঙ্গ পড়েন সবাই।
কিন্তু এর প্রায় ২৫-৩০ মিনিট পর আবার সাকিব-ভক্ত পক্ষ মিরপুর স্টেডিয়ামের গেইটে জড়ো হয়। আগের মতোই ফারুক আহমেদের পদত্যাগ ও সাকিবকে ফেরানোর দাবি জানিয়েছেন, পাশাপাশি তাদের ওপর হওয়া হামলার বিচারও দাবি করেছেন তারা।