
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সমসাময়িক রাজনৈতিক বাস্তবতায় ‘সংস্কার’ শব্দটির অপব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, “আজ যাঁরা বড় বড় অফিসে, এয়ারকন্ডিশনের আরামে বসে সংস্কারের কথা বলছেন, তাঁরা মূলত সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন—বেতন, বোনাস, ভাতা এবং গাড়ি পাচ্ছেন। এতো সুবিধা নিয়ে সংস্কারের কথা বলা নিছক ভণ্ডামি।”
রোববার বিএনপির ঘোষিত ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা: ৩১ দফা ও নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, “বিএনপি যখন সংস্কারের কথা বলেছে, তখন আমরা সুবিধাভোগী অবস্থানে ছিলাম না। বরং আমরা রাজপথে ছিলাম—একদিকে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন, অন্যদিকে দেশ গঠনের রূপরেখা ভাবছি।”
সংস্কার আগে, নির্বাচন পরে—এমন দাবিকে সরাসরি খণ্ডন করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “এই দাবিদারদের মধ্যে কজন শেখ হাসিনার চোখে চোখ রেখে কোনোদিন কথা বলেছে? স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সংস্কারের কথা বলেছে?”
তিনি মনে করিয়ে দেন, যখন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দী, মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা চলছে, সেই কঠিন সময়ে বিএনপি জনগণের ভবিষ্যৎ গঠনের জন্যই ৩১ দফা সংস্কার পরিকল্পনা দিয়েছে।
তারেক রহমান বলেন, “হ্যাঁ, আমাদেরও ভুলত্রুটি রয়েছে। সীমাবদ্ধতা, ব্যর্থতা কিংবা দলের ভেতরে কেউ কেউ অনৈতিক কাজেও জড়াতে পারে। কিন্তু আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো—আমরা অস্বীকার করি না। অন্যায়কারীদের আমরা প্রশ্রয় দিই না।”
এ প্রসঙ্গে অন্য দলগুলোর উদ্দেশে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “অনেক রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকলেও, তারা কখনো নিজেদের সদস্যদের জবাবদিহির আওতায় আনে না। অথচ বিএনপি চেষ্টা করছে অন্যায়কারীদের বিচারের আওতায় আনতে। আমরা বলেছি—অন্যায়কারী কেবল অন্যায়কারী, তিনি দলের হলেও ছাড় নেই।”
তারেক রহমান আরও বলেন, বিএনপির লক্ষ্য একটাই—বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন। “এই দল একা কিছু করতে পারবে না,” তিনি বলেন, “সবাইকে নিয়ে, প্রতিটি দেশপ্রেমিক মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আমরা ৩১ দফার বাস্তবায়ন সম্ভব করে তুলব।”
তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে এগিয়ে আসে, দেশের ভবিষ্যতের জন্য ‘আরও ভালো কিছু’ গড়ার স্বপ্নে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়।