Image description

‘এই সরকার অন্তর্বর্তীকালীন এবং নিরপেক্ষ। এই সরকারের পক্ষে যত দ্রুত সম্ভব বিভিন্ন ধরনের সংস্কারের যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছে, সেগুলো শেষ করে বিশেষ করে নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে সংস্কার প্রয়োজন দ্রুত শেষ করে একটি নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়া।’

বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি আদালতে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় খালাস পেয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

আজ ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক আবুল কাশেমের আদালত খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ছেলে খন্দকার মাহবুব হোসেন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক লাইন ডিরেক্টর ডা. মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস দেন।

খালাস পেয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আল্লাহ দরবারে শুকরিয়া আদায় করি। আমি, আমার ছেলে ও স্বাস্থ্য অধিদপ্ততের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা, বানোয়াট মামলা করা হয়। যে মামলার কোনো ভিত্তি, প্রমাণ ছিল না। ওয়ান ইলেভেনের সময় এ মামলা হয়। সেই হিসেবে দেখতে পাবেন, প্রায় ১৬ বছর এ মামলা চলেছে। কিন্তু সরকার পক্ষ থেকে যে প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণ দিয়ে এ মামলায় অভিযোগ করবে এবং সেটা প্রমাণ করবে, এমন কোনো তথ্য-প্রমাণ দিতে পারে নাই। যার প্রেক্ষিতে এতদিন পরে আজকে এই আদালত আমাদের মামলা থেকে খালাস দিয়েছেন।’

সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, ‘এ মামলার মাধ্যমে আমরা দেখতে পাচ্ছি ওয়ান ইলেভেনের সময় এবং তার পরে শেখ হাসিনার সরকার এই মিথ্যা মামলাগুলোকে কেন্দ্র করে আমাদের নির্যাতিত করেছে। আমি গত ১৭ বছরে প্রায় পাঁচ বছরের বেশি বিভিন্ন মামলায় হাজত খাটতে হয়েছে। এতগুলো মামলায় এভাবে আমাদের আসতে হয়েছে। তার মাধ্যমে এই স্বৈরাচারী-ফ্যাসিস্ট সরকার যারা জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বিতাড়িত হয়েছে, তারা কিন্তু এসব মামলা ব্যবহার করে আমাদের নির্যাতিত করে রাজনীতি থেকে বিদায় করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু এদেশের মানুষের বিচারে, আল্লাহর হুকুমে তাদের পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করে পালাতে হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে, সাজা দিয়ে, জেলখানায় রেখে তাকে অসুস্থ করে ফেলেছে হত্যার উদ্দেশ্যে। আল্লাহর রহমতে তিনি বেঁচে আছেন, দেশে আছেন। আর শেখ হাসিনা পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এদেশে স্বৈরাচার আগেও কিন্তু ছাত্র গণআন্দোলনে পদত্যাগ করেছে। কিন্তু দেশ থেকে পালিয়ে যায়নি। কিন্তু শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন। এর থেকে বোঝা যায়, তারা কত দুর্বল। কত অন্যায়, অপরাধ, নির্যাতন এদেশের মানুষকে করেছে। শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য।’

মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকে জনগণের প্রত্যাশা, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে এই সরকারকে (অন্তর্বর্তী সরকার) আজ ক্ষমতায় বসিয়েছে। এই সরকার অন্তর্বর্তীকালীন এবং নিরপেক্ষ।নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে সংস্কার প্রয়োজন দ্রুত শেষ করে একটি নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়া এই সরকারের দায়িত্ব। আর যত দ্রুত এটা সম্ভব হবে দেশের জন্য, জনগণের জন্য মঙ্গল এবং এই সরকারের জন্যও মঙ্গল।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে দলের মধ্য থেকে দাবি তুলেছি, ওয়ান ইলেভেনের সময় এবং স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সময় যেসব মামলা, বানোয়াট মামলা হয়েছে, সেগুলো যত শীঘ্রই সম্ভব প্রত্যাহার করা। এটা আগামী নির্বাচনের সময় অবশ্যই বাধা সৃষ্টি করবে। সরকার ইচ্ছা করলে অনতিবিলম্বে বাধামুক্ত করতে পারে। সরকার আন্তরিক হলে এটা সম্ভব।’