Image description

বিগত ১৬ বছরে জ্বলে-পুড়ে বিএনপি খাঁটি সোনায় পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

তিনি বলেছেন, ১৬ বছরে জ্বলে-পুড়ে বিএনপি খাঁটি সোনায় পরিণত হয়েছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা ত্যাগ করতে শিখেছে, রক্ত দিতে শিখেছে ও জীবন দিতে শিখেছে। আমরা গণতন্ত্রের লড়াই, মানবাধিকারের লড়াই ও ভোটারধিকার ফিরে পাওয়ার লড়াইয়ে থেমে থাকব না।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ভয়েস ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ভোটার রাইটস আয়োজিত ‘টেইক ব্যাক বাংলাদেশ: নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

নির্বাচন ব্যতীত অন্য কোনো উপায়ে আওয়ামী লীগকে বাতিল করা ঠিক হবে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগকে যদি ক্যান্সেল করে দিতে চান অন্য কোনোভাবে, এগুলো টিকে থাকে না। আওয়ামী লীগকে ক্যান্সেল করতে হবে জনগণের ভোটের মাধ্যমে। ফ্যাসিস্টকে ক্যান্সেল করবেন ভোটের মাধ্যমে চরমভাবে পরাজিত করে। অন্য কোনোভাবে ক্যান্সেল করতে গেলে সুফল বয়ে আনে না।

আমির খসরু বলেন, আমরা সবাই মিলে হাসিনার পতন ঘটিয়েছি। এখন আমাদের সবাইকে মিলে একটি দেশ গড়তে হবে। বিএনপি শুধু বিপ্লব নয়, বিএনপি সংহতি। বিএনপি জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদের কথা বলছে। আমরা জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে যেটা প্রতিষ্ঠিত করব, সেটাই থাকবে।

বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, জনগণকে বাইরে রেখে যে বয়ান তৈরি করা হচ্ছে, তা জাতির কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবের একটা বয়ান ছিল, স্বৈরাচারের একটা ছিল এবং ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার একটা বয়ান ছিল। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা বলেছিল, উন্নয়নের ওপরে গণতন্ত্র। কিন্তু উন্নয়নকে গণতন্ত্রের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে চলতে হয়। গণতন্ত্র বাদ দিয়ে উন্নয়ন করলে পকেটের উন্নয়ন হয়। এখন একমাত্র বয়ান হবে নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়া। এর বাইরে নতুন বয়ান শুনতে চাই না।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বিএনপির সমর্থন অব্যাহত আছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির জন্য সংস্কার নতুন কিছু নয়। খালেদা জিয়া ২০১৬ সালে ভিশন ২০৩০ সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তারেক রহমানও যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সব দলের মতামতের ভিত্তিতে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছেন। শুধু সবাইকে নিয়ে নয়, বাস্তবায়নের জন্য ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে থাকা সব দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটা জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। অনির্বাচিত কোনও সরকার তাদের নিজস্ব চিন্তা-ভাবনা ও দর্শনের মাধ্যমে সেভাবে সংস্কার করার সুযোগ নেই। তবে, যে সমস্ত সংস্কার ঐকমত্যে আছে, সেগুলো বাস্তবায়নে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। দেশকে সঠিক ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনতে হবে।

ভয়েস ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ভোটার রাইটসের আহ্বায়ক মোস্তফা কামাল মজুমদারের সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের রহমতুল্লাহ। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক সহকারী অধ্যাপক ড. এম মুজিবুর রহমান।