চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে মশাল মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ সময় তারা সংবিধান বাতিল এবং রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবি জানান।
সোমবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে মশাল মিছিল শুরু হয়। পরে শাহবাগমুখী রাস্তা ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, মধুর ক্যানটিন, শ্যাডো, সূর্য সেন হল, উপাচার্যের বাসভবন ঘুরে আবার রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।
এ সময় আন্দোলনকারীরা ‘একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর’; ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন ভারতে’; ‘ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ, করতে হবে’; ‘এক দুই তিন চার, ছাত্রলীগ ক্যাম্পাস ছাড়’; ‘স্বৈরাচারের দোসরেরা, হুঁশিয়ার সাবধান’ ‘মুজিববাদ নিপাত যাক, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’; ‘ছাত্রলীগ/সন্ত্রাসীদের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
মিছিল শেষে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা বলেন, সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগকে কোনোভাবে আর এদেশে মেনে নেবে না। গত ১৫ বছরের কর্মকাণ্ড তাদের কোনোভাবে ছাত্রসংগঠন হিসেবে বৈধতা দেয় না। ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশ থেকে শিগগিরই তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে।
সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ছাত্রলীগ থাকবে কি না তা ঠিক হয়ে গেছে ১৫ জুলাই। ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগের কবর রচিত হয়ে গেছে ৫ আগস্ট। ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন আর কখনও হবে না।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পুকে উদ্দেশ করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আপনি বঙ্গভবনের বিলাসিতা নিয়ে নিজের রাস্তা মাপুন।
সমন্বয়ক আব্দুল কাদের বলেন, ছাত্রসংগঠনের নামে ফ্যাসিবাদের হাতিয়ার হয়ে ও তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছে যারা, তাদের অনতিবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে।
এর আগে, চবিতে রাতের অন্ধকারে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন ঢাবির শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ ব্যানারে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের দাবি জানানো হয়।
জানা যায়, সোমবার ভোর ৪টা নাগাদ ছাত্রলীগের কর্মীরা প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলগেট এলাকায় আপ্যায়ন নামে এক দোকানে হামলা করে। এরপর আশপাশের আরও কিছু দোকানপাটে ভাঙচুর চালায়। এ সময় তারা কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোড়ে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে আতঙ্ক ছড়ায়।
খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে রেলগেট এলাকায় যায়। সেখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা পরবর্তীতে জিরো পয়েন্ট এলাকায় অবস্থান নেন।