Image description

গত ৬ মাসে প্রায় ২০ শতাংশ তৈরি পোশাকের অর্ডার বাতিল করেছে বিদেশি ক্রেতারা। শ্রমিক অসন্তোষে এখনও আস্থা পাচ্ছেন না তারা। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, আশুলিয়া এলাকার কারখানাগুলো নিয়ে আস্থা কম তাদের। বিজিএমইএ ও বিকেএমইয়ের হিসাবে, পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আগামী ৬ মাসে সারাদেশে প্রায় ১০০ কারখানা বন্ধ হবে।

সাভার ও আশুলিয়ায় ছোট-বড় পোশাক কারখানার সংখ্যা ৪৫০টি। জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী শ্রমিক অসন্তোষের কবলে এই এলাকার কারখানাগুলো। বন্ধ হয়েছে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-এর তালিকাভুক্ত প্রায় ২০০ কারখানা।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আশুলিয়া এলাকার শ্রমিক অসন্তোষ পর্যবেক্ষণ করছেন বিদেশি ক্রেতারা। এসব কারখানায় কাজ দিতে আস্থা পাচ্ছেন না তারা।

বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘ব্র্যান্ড ও বায়াররা এখন আশুলিয়া বেল্টের যে কোনো ফ্যাক্টরিতে কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে খুব সতর্ক, সচেতন। তারা অনেকটাই আস্থাহীনতায় ভুগছে। আমাদের অর্ডার যে অন্য জায়গায় যাচ্ছে তার প্রমাণটা সামনে পাওয়া যাবে।’

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ৬ মাসের অস্থিরতার ধকল আগামী বছরের জুন পর্যন্ত বইতে হবে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়া না গেলে আগামী ৬ মাসে আরও ১০০ কারখানা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘তারা হয়ত চেষ্টা করছে ব্যাংকের সাথে কোনো নেগোসিয়েশন করে একটা পর্যায়ে গিয়ে আবার যদি পারে চালু করবে। না হলে তারা হয়ত পার্মানেন্টলি বন্ধ হয়ে যাবে। অর্থাৎ আগামী ১ বছরে আরও শ খানেক ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আমরা করছি।’ 

শাশা ডেনিমসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামস মাহমুদ বলেন, ‘শতভাগ ফ্যাক্টরি সচল রাখতে পারলেই কিন্তু আমরা ব্যাংকের ঋণ শোধ বা কর্মীদের বেতন চালু রাখতে পারব। কিন্তু এখন যদি আমার ২০ ভাগ ক্যাপাসিটিতে ফ্যাক্টরি চালাতে হয় তাহলে যেটা হবে আমি তো আর্থিকভাবে সবল হবো না।’

যদিও অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বাংলাদেশ থেকে গড়পড়তা সস্তা পোশাক কিনছে। ফলে তারাও বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল। তাই সাময়িক অস্বস্তি থাকলেও বড় আকারে বাজার হারানোর আশঙ্কা নেই।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘ভিয়েতনাম বলি কম্বোডিয়া বলি, কারও এত বড় সাপ্লাই বেজ নেই। সুতরাং বড়ভাবে এখান থেকে মার্কেট শিফট হয়ে যাওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। তবে সাময়িক কারণে কিছু সময়ের জন্য হয়ত কিছু অর্ডার এদিক সেদিক হতে পারে।’

তবে, ক্ষতি কাটাতে আগামী শীতের জন্য কাজ পেতে আগাম তৎপরতার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।