২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকেই শুরু হতে যাচ্ছে মাসব্যাপী ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা। এবারও রাজধানীর পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে (বিবিসিএফইসি) মেলা হওয়ার কথা রয়েছে। প্রথমবারের মতো মেলার টিকিট পাওয়া যাবে অনলাইনে।
রোববার রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব ও বাণিজ্যমেলার পরিচালক বিবেক সরকার এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আগামী ১ জানুয়ারি থেকে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা শুরু হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এদিন মেলা উদ্বোধন করবেন।
বাণিজ্যমেলার পরিচালক বলেন, প্রতি বছরই বাণিজ্যমেলায় নতুন কিছু সংযোজন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবার আমরা জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগ সামনে রেখে মেলা সাজাবো। শহিদদের সম্মান জানাতে থাকবে শহিদ আবু সাঈদ ও মীর মুগ্ধ নামে দুটি কর্নার। একই সঙ্গে যুবকদের জন্য একটি ইয়ুথ প্যাভিলিয়ন থাকবে। এছাড়া সিনিয়র সিটিজেনদের বসার জন্য একটি জায়গা রাখা হবে, সেখানে শুধু বয়স্করা বসতে পারবেন।
তিনি আরো বলেন, এবারের মেলায় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ সুযোগ রাখা হচ্ছে। নারী উদ্যোক্তারা অপেক্ষাকৃত কম দামে স্টল বরাদ্দ পাবেন। যেখানে তারা তুলনামূলক কম দামে পণ্য বিক্রি করতে পারবেন।
মেলা প্রাঙ্গণ সাজানোর পরিকল্পনা জানিয়ে বিবেক সরকার বলেন, এ বছর মেলার প্রবেশদ্বারে ভিন্নতা আনা হচ্ছে। প্রবেশ দ্বারে থাকছে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের থিম। এছাড়া পুরো মেলা প্রাঙ্গণে ইপিবির কর্মকাণ্ড তুলে ধরাসহ আর্থিক খাতের নানা বিষয় তুলে ধরা হবে।
সশরীরে টিকিট কেনার পাশাপাশি এবারের মেলায় থাকছে অনলাইনে টিকিট ক্রয়েরও সুযোগ। প্রথমবারের মতো নেওয়া এ উদ্যোগ নিয়ে তিনি বলেন, এরই মধ্যে আমাদের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা হয়েছে। ই-টিকিটিং হলে দর্শনার্থীরা মোবাইলে কিউআর কোড দেখিয়ে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন।
ইপিবি সচিব বলেন, অনলাইনের এ সেবার মাধ্যমে দর্শনার্থীরা যেখান থেকে খুশি অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট ক্রয় করতে পারবেন। এতে একদিকে যেমন মেলায় প্রবেশে অতিরিক্ত ভিড় এড়ানো যাবে, অপরদিকে বাঁচবে দর্শনার্থীদের মূল্যবান সময়ও। এর বাইরে আগের নিয়মে লাইনে দাঁড়িয়েও দর্শনার্থীরা টিকিট কিনতে পারবেন। পাশাপাশি বিআরটিসি বাস কাউন্টার থেকে যেন টিকিট কেনা যায়, সেই চেষ্টাও করা হচ্ছে।
মেলার প্রবেশমূল্য এখন পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়নি জানিয়ে বাণিজ্যমেলার পরিচালক বলেন, গত বছরের মতো এবারও মেলায় প্রবেশমূল্য প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৫০ টাকা ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২৫ টাকা থাকছে। দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য এবারও থাকছে বিআরটিসির বাস সার্ভিস। কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচ থেকে মেলা পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এই বাসগুলো চলাচল করবে।
জানা গেছে, বাণিজ্যমেলা আয়োজনের কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এবারের আসরে ভারত, পাকিস্তান, ইরান, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। সবমিলিয়ে স্টল থাকবে ৩৫০টি।
মেলায় পুলিশ, র্যাবসহ সেনাবাহিনী সার্বিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে। পাশাপাশি থাকবে মোবাইল কোর্ট। এছাড়া দর্শনার্থীদের ভোগান্তি এড়াতে মেলাকেন্দ্রে বৃহৎ পরিসরে পার্কিং সুবিধা রাখা হচ্ছে।