Image description

আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ভারতে ইলিশ রফতানি করতে ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এসব প্রতিষ্ঠান দুই হাজার ৪২০ টন ইলিশ রফতানির অনুমতি পেয়েছে।

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সুলতানা আক্তারের সই করা এক অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সরকার তিন হাজার টন ইলিশ রফতানির সিদ্ধান্ত নিলেও ৪৯টি প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে দুই হাজার ৪২০ টন ইলিশ রফতানির অনুমোদন দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

রফতানিকারকরা জানান, আগে থেকে ঘোষণা না থাকায় অনেক প্রতিষ্ঠানই ইলিশ রফতানির সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। এ বছর সর্বোচ্চ এক হাজার টন ইলিশ রফতানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সুলতানা আক্তার বলেন, ‘আমাদের কাছে যে আবেদনগুলো পড়েছে, যাদের ডকুমেন্ট ঠিক ছিলো ওই প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে ইলিশ রফতানির বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।’

এদিকে, ইলিশ রফতানির আদেশে রফতানিকারকদের আটটি শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। শর্তে বলা হয়েছে, কোনো প্রতিষ্ঠানই অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে বেশি রফতানি করতে পারবে না। এ অনুমতির মেয়াদ আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। আর ৪৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৮টিকে ৫০ টন করে ও একটি প্রতিষ্ঠানকে ২০ টন ইলিশ রফতানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

ইলিশ রফতানির অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে- আরিফ সি ফুডস, জারা এন্টারপ্রাইজ, সততা ফিশ ফিড, এস এ আর এন্টারপ্রাইজ, নাহিয়ান এন্টারপ্রাইজ, তানিশা এন্টারপ্রাইজ, রুপালী সি ফুডস লিমিটেড, লাকি এন্টারপ্রাইজ, টাইগার ট্রেডিং, রিপা এন্টারপ্রাইজ, জেবিএস ফুড প্রোডাক্টস অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেড, মাশফি অ্যান্ড ব্রাদারস, মহিমা এন্টারপ্রাইজ, সেভেন স্টার ফিশ প্রসেসিং কো. লিমিটেড, রহমান ইমপেক্স, আসিফ ইমপেক্স, নোমান এন্টারপ্রাইজ, যমুনা এগ্রো ফিশারিজ, রুপালী ট্রেডিং কর্পোরেশন, সততা ফিশ, প্যাসিফিক সি ফুডস লিমিটেড, জেজে ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল, বিশ্বাস ইন্টারন্যাশনাল, ক্যাপিটাল এক্সপোর্ট ইপোর্ট অ্যান্ড কোং, অর্পিতা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, সুমন ট্রেডার্স, সাজ্জাদ এন্টারপ্রাইজ, সততা ফিশ, আচল এন্টারপ্রাইজ, ২ এইচ ইন্টারন্যাশনাল, এম এ পি ইন্টারন্যাশনাল, সরদার এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট, ইউভা ট্রেডিং, ফারিয়া ইন্টারন্যাশনাল, আসফা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, স্ট্যান্ডার্ড ফুড কর্পোরেশন, জেএস এন্টারপ্রাইজ, পদ্মা এগ্রো ফিশারিজ, ন্যাশনাল এগ্রো ফিশারিজ, মেসার্স আহনাফ ট্রেডিং, নাফিজা এন্টারপ্রাইজ, ডিপ সি ফিশারিজ লিমিটেড, মাসুদ ফিশ প্রসেসিং, আরকে ট্রেডার্স, বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজ, ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজ ও লোকজ ফ্যাশন। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লোকজ ফ্যাশনকে ২০ টন ইলিশ রফতানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাকি সবগুলো প্রতিষ্ঠান ৫০ টন করে ইলিশ রফতানির অনুমোদন পেয়েছে।

প্রসঙ্গত, ইলিশ মূলত রফতানি নিষিদ্ধ একটি পণ্য। সরকারের বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে দুর্গাপূজায় ভারতে ইলিশ রফতানি হয়ে থাকে। সদ্য ক্ষমতাচূত আওয়ামী লীগ সরকার বেশ কয়েক বছর ধরেই ভারতে ইলিশ রফতানি করে আসছিল। তবে কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার দায়িত্ব নেয়ার পরপরই জানান, দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে তারপরই ইলিশ রফতানি হবে। তার এই বার্তায় স্পষ্ট হয়ে উঠে, ভারতে ইলিশ রফতানি বন্ধ হতে পারে। তবে সরকার সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে তিন হাজার টন ইলিশ মাছ রফতানির অনুমোদন দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা পর্যন্ত ইলিশ রফতানির জন্য আবেদন করা গেছে।