রুচিবোধের ভিন্নতায় মানুষের ঋতুপ্রেম বৈচিত্র্যপূর্ণ হয়। রিমঝিম বর্ষা কারো কাছে খুব প্রিয়। আবার কারো কাছে কাঠপোড়া রোদের গ্রীষ্ম বেশ মানানসই। আবার খেজুরের রস, টাটকা সবজি নিয়ে হাজির হয় শীতকাল। কুয়াশার মিহি চাদরে মোড়ানো এই শীতকালও অনেকের ভীষণ ভালো লাগে। সবচেয়ে বড় কথা হলো- শীতের মৌসুম মুমিনের খুব প্রিয়। কারণ এ সময়ে ইবাদতের সুযোগ বেশি থাকে। শীতকালকে মুমিনের বসন্তকাল হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন প্রিয় নবীজি। (মুসনাদে আহমদ: ১১৬৫৬)
প্রিয়নবীজি শীতকালকে মুমিনের বসন্তকাল আখ্যা দেওয়ার বিশেষ কারণ রয়েছে। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘শীতের রাত দীর্ঘ হওয়ায় মুমিন রাত্রিকালীন নফল নামাজ আদায় করতে পারে এবং দিন ছোট হওয়ায় রোজা রাখতে পারে।’ (বায়হাকি: ৩৯৪০)
প্রখ্যাত সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলতেন, ‘শীতকালকে স্বাগতম। কেননা তা বরকত বয়ে আনে। রাতগুলো দীর্ঘ হয়। ফলে তা ‘কিয়ামুল লাইলের জন্য (রাতের তাহাজ্জুদ নামাজ) সহায়ক এবং দিন ছোট হওয়ায় রোজা রাখতে সহজ।’ (আল-মাকাসিদুল হাসানা: ২৫০)
ইবনে রজব হাম্বলি (রহ.) বলেন, শীতকাল মুমিনদের বসন্ত। কারণ, এ সময়ে মুমিন আল্লাহর আনুগত্যের বাগানগুলোতে আনন্দ-উল্লসিত হয়। ইবাদত-বন্দেগির চারণভূমিতে বিচরণ করে। সহজ-ছোট আমলগুলোর কানন-বীথিতে পরিভ্রমণ করে। (লাতায়িফুল মাআরিফ ফিমা লিল মাওয়াসিমি মিনাল ওজায়িফ, পৃষ্ঠা-৩২৬)
শীতকালীন সময়কে কাজে লাগাতে তৎপর থাকেন প্রকৃত মুমিনরা। কেননা আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগিতে মগ্ন হওয়ার দারুণ সুযোগ শীতকাল। শীতের কষ্ট সহ্য করার কারণে এ সময়ে ইবাদতের সওয়াবও বেশি। তাছাড়া শীতার্ত মানুষের সেবা করার মাধ্যমে জান্নাত লাভের দারুণ সুযোগ লাভ হয় শীতকালে। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে মুমিন অন্য বিবস্ত্র মুমিনকে কাপড় পরিয়ে দিল, মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তিকে জান্নাতের সবুজ কাপড় পরিয়ে দেবেন।’ (তিরমিজি: ২৪৪৯)
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে শীতকালকে কাজে লাগানোর তাওফিক দান করুন। আমিন।