সেই দশরথ স্টেডিয়াম। সেই নেপাল। পুরোনো মঞ্চে চেনা প্রতিপক্ষকে হারিয়ে পুনরাবৃত্তির দারুণ এক গল্প লিখলেন বাঘিনীরা। স্বাগতিক দর্শকদের স্তব্ধ করে দিয়ে দ্বিতীয় সাফ জয়ের উল্লাসে মাতলেন সাবিনা-তাহুরারা।
অবশ্য গতবার ৩-১ গোলের পরিষ্কার জয় পেলেও এবার নেপালের বিরুদ্ধে ২-১ গোলের জয় পেয়েছে লাল-সবুজ কন্যারা।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬ টা ৪৫ মিনিটে মাঠে গড়ায় সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল। মুখোমুখি আগের সাফের দুই ফাইনালিস্ট। লড়াইটা নিয়েও তাই দুই দলের খেলোয়াড় ও সমর্থকদের মধ্যে ছিল অন্যরকম অনুভূতি।
শক্তিমত্তায় দুই দলের সমতার প্রমাণ মিললো প্রথমার্ধে। লড়াই হয়েছে সমানতালে। যেখানে আক্রমণের শুরুটা করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু আক্রমণে এগিয়ে ছিল স্বাগতিকরা। অবশ্য একাধিকবার চেষ্টা করেও গোল পায়নি কোনো দল।
বিরতির পর গোলের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালায় দুই দলই। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ম্যাচ জমে ওঠে ম্যাচ। তারই ধারাবাহিকতায় ৫১তম মিনিটে বাংলাদেশকে লিড এনে দেন মনিকা চাকমা। সংঘবদ্ধ আক্রমণে তহুরা-সাবিনা খাতুন বল দেওয়া-নেওয়া করছিলেন বক্সের সামনে। জটলার মধ্যে বল পান মনিকা। সেখান থেকে দুর্দান্ত প্লেসিংয়ে গোল করেন তিনি।
তবে এই লিড টিকে ছিল কেবল ৩ মিনিট। ৫৪ মিনিটে আমিশা কার্কির গোলে সমতায় ফেরে স্বাগতিক নেপাল। মধ্যমাঠ থেকে দারুণ থ্রু পাস পান আমিশা। বাংলাদেশের ডিফেন্সকে ফাঁকি দিয়ে ঢুকে পড়া সেই বল রিসিভ করে আগুয়ান গোলরক্ষক রুপ্না চাকমাকে পরাস্ত করেন নেপালি এই ফরোয়ার্ড।
নেপালের ম্যাচে ফেরায় আরও বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন বাংলার মেয়েরা। প্রতিশোধের গল্প রচনার মরিয়া চেষ্টা চালান নেপালের মেয়েরাও। তবে, গোলের দেখা মিলছিলো না কারও, উভয়পক্ষই ব্যর্থতা নিয়ে ফিরছিল প্রতিপক্ষ রক্ষণভাগ থেকে।
৬৭ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে অসাধারণ এক শট নেন মারিয়া মান্দা। সেটি ঠেকিয়ে দেন নেপাল গোলরক্ষক আঞ্জিলা। এরপর ৭১ ও ৭৬ মিনিটে পরপর দুটি প্রতি-আক্রমণে ব্যর্থতা নিয়ে ফেরে নেপালি মেয়েরা।
পরে বাংলাদেশ ম্যাচে আবারও লিড নেয় ৮২ মিনিটে। বাঁ প্রান্তে থ্রো ইন পায় বাংলাদেশ। মাসুরার থ্রো থেকে বল পান ঋতুপর্ণা চাকমা। দূর থেকে কোণাকুণি এক জোরালো শটে ঋতুপর্ণা গোল করেন। নেপালের গোলরক্ষক বল হাতে লাগালেও সেটি সেকেন্ড বারের ভেতরের অংশে লেগে জালে জড়িয়ে যায়। দারুণ গোল পেয়ে উৎসবে মাতে বাংলাদেশ।
বাকি সময়ে গোল করতে পারেননি আর কেউই। ফলে ২-১ গোলের জয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সাফ শিরোপা জিতে নেন বাংলার বাঘিনীরা।